নরক চতুর্দশী
ভূত চতুর্দশী কি ?
আমরা সবাই ভূত চতুর্দশী নামটি শুনেছি । ভূত চতুর্দশী কি ? এর পিছনের কাহিনী কি? জানেন আপনি? সাহিত্য সংস্কৃতি বা আমাদের সামাজিক জীবনে এই নামটি আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। ছোটবেলা থেকেই এই নামটি শুনলে আমাদের মনের মধ্যে রোমাঞ্চ অনুভূত হতো। ভূত চতুর্দশী কি? আমাদের প্রিয় উৎসবের পিছনের কি পৌরাণিক কাহিনী আছে, তা আমরা জানবো আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে।ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী বা নরক নিবারণ আমাদের গা ছমছমে উৎসবের এক দিন।এই দিনেই স্বর্গ আর নরকের দ্বার খুলে যায়। পুরান মতে এই দিন আমাদের পূর্বপুরুষের 14 জন আত্মা নিজেদের গৃহে ফেরেন। কিন্তু কেন এমন আজব কান্ড হয়কি কারণ লুকিয়ে আছে তার পিছনে?
ভুত চতুর্দশীর পিছনে পৌরাণিক কাহিনী:
অসুরের রাজা ছিল বলি এই বলি একসময় স্বর্গ দখল করে, অসুরের রাজা ছিল বলি তাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন। তখন সমস্ত দেবতার স্বর্গ উদ্ধারের জন্য ভগবান বিষ্ণুর কাছে মুক্তির জন্য যান। তখন ভগবান বিষ্ণু ওই অসুরকে দমন করতে হরির বামন রূপ নিয়ে স্বর্গে অবর আবির্ভূত হন। ভগবান বিষ্ণুর এই বামন রূপ দেখে বলি কিছু বুঝতে পারেননি। ভগবান বিষ্ণু বলির কাছে তিনটি চরণ রাখার জায়গা ভিক্ষা চান। অসুরের রাজা বলি নিজের অহংকারে উদ্বুদ্ধ থাকায় তিনি তা মেনে নেন, এবং তার শর্তে রাজি হয়ে যান ভিক্ষা দিতে।
তখন ভগবান বিষ্ণু নিজের বৃহৎ রূপ নিয়ে সামনে আসেন। তখন ভগবান বিষ্ণু এক পা দিয়ে সমস্ত আকাশ আর বাতাস অধিকার করেন। দ্বিতীয় পা দিয়ে তিনি সমস্ত পৃথিবীর অধিকার করেন আর তৃতীয় পা রাখার জন্য যখন তিনি জায়গা পাচ্ছিলেন না, তখন বলি রাজা নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং ভগবান বিষ্ণুর সামনে নিজের মাথা পেতে দেন।তৃতীয় পা রাখার জন্য।
তখন ভগবান বিষ্ণু তার মাথায় পায়ের চাপ দিয়ে তাকে পাতালে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ভগবান বলি নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং অনুতপ্ত হওয়ায় ভগবান বিষ্ণু তাকে আশীর্বাদ করেন যে বছরের একটা দিন তিনি স্বর্গ থেকে নিজে উঠে আসতে পারবেন নিজের সমস্ত ভূত প্রেত এবং অশরীরী আত্মা নিয়ে।
আর সেই দিনটি হল ভূত চতুর্দশী। তারপর থেকে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশ দিনটি টি এবং দীপান্বিত অমাবস্যার আগের দিন আমরা ভূত চতুর্দশী পালন করে আসছি। তারপর থেকে এই দিনের এই তিথিতে ১৪ জন পূর্বপুরুষকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বাড়িতে দীপ জ্বালিয়ে তাদের আগমনের জন্য বার্তা দেওয়া হয়।
কালিকা পুরান মতে এই দিনেই মা চন্ডীর আবির্ভাব হয়। এবং মা চন্ডী নিজের সমস্ত ভূতপ্রেত এবং অশরীরী আত্মা নিয়ে সমস্ত অশুভ শক্তিকে দমন করে শুভ শক্তির উন্মেষ ঘটান। আর এই দিনেই রামচন্দ্র নিজের চোদ্দ বছরের বনবাস শেষ করে অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তাই এই দিনটি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আজ।