বয়স বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা আমাদের হয়ে থাকে। তবে হাঁটুর ব্যথা তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কষ্টদায়ক একটি ব্যথা, আস্তে আস্তে শুরু হয় ব্যথা, তারপর আস্তে আস্তে ব্যথা এতটা পর্যায় হয় যে আপনি ঠিক করে রাতে ঘুমাতে পারেন না পায়ের ব্যথায় কাহিল হয়ে পড়েন।
এখন ইয়ং লোকের মধ্যেও দেখা যায়, এই ব্যথা কুড়ি বছর বয়সেই হাঁটুর ব্যথা এবং পায়ের ব্যথায় নাজেহাল হয়ে পড়ে যুবক জেনারেশন। তবে কেন এই ব্যথা হয় আর এই ব্যথা থেকে উপকরণ পাওয়ার জন্য কি কি করা দরকার ? তা আজকে আমরা আলোচনা করব। কিছু ঘরোয়া টোটকা আছে যার সাহায্যে যেটা করলে আপনি খুব সহজেই এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। এবং অনেক লোক আছেন যারা হাজার হাজার টাকার ওষুধ প্রতিমাসে খান। কিন্তু এত ওষুধ খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে সুবিধাজনক হয় না। এবং ব্যথা তো যাই না, উল্টে আপনার মাসে প্রচুর টাকা ওষুধের পিছনে খরচ হয়ে যায়। ব্যথা কিছুতেই সারেনা
ক্রমাগত যদি আপনি এইভাবে ওষুধ খেতে থাকেন, তাহলে আপনার শরীর আরো খারাপ হয়ে পড়বে।
জীবন-যাপনে কিছু বদলানোর আর এই টোটকাগুলি করুন, তাহলেই দেখবেন আপনার ব্যথা ক্রমেই কমে যাবে। আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন ধীরে ধীরে, তবে এখানে বলে রাখা ভাল ব্যথা যদি আপনার হালকা থেকে মাঝারি রকমের হয় তাহলে এটাকে বাড়িতেই চেয়ে চেষ্টা করুন প্রশমন করার, আর যদি ব্যথা খুব বেশি হয় তবেই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ব্যথাকে পুষে রাখবেন না। সঠিক ডাক্তার দেখিয়ে তার পরামর্শ মতো পদক্ষেপ নিন। ব্যথা যদি অল্প হয় এই কিছু পদক্ষেপ আপনার ব্যথা কমাতে পারে।
1. ঠান্ডার গরম থেরাপি:
আপনার হাঁটুর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আপনাকে ঠান্ডা আর গরম জল ঢালতে হবে, প্রতিদিন কুড়ি মিনিট ঠান্ডা আর গরম জল আপনার ব্যথা জায়গায় ঢালুন, আর দেখবেন ব্যথা কমে যাবে। প্রথম দুদিন গরম এবং ঠান্ডা আপনি ওখানে চেপে ধরে রাখুন, দিনের একটি সময় দেখবেন ব্যথা কমে যাবে। জেল প্যাক এবং ঠান্ডা জল ব্যবহার করতে পারেন। তবে কখনও বরফ সরাসরি ত্বক এর উপর দেবেন না। কোন কিছুতে নিয়ে তারপর আপনার ত্বক এর উপর দেখবেন। ঠান্ডা গরম করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যথা কমে যাবে।
2.(RICE)রাইস পদ্ধতি:
পায়ে যদি কখনো আপনার কোন কারণে ব্যথা লাগে, তাহলে সবার আগে মনে রাখবেন (RICE)রাইস পদ্ধতি। রাইস পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার ব্যথা খুব সহজেই আপনি প্রশমিত করতে রাখবেন।
রাইস কয়েকটি শব্দের যুক্ত,
R = Rest (যার অর্থ আর এর জন্য রেস্ট)
I = Ice (বরফ)
C = Compression (সঙ্কোচন)
E = Elevation (বিশ্লেযাশন)
এই কয়েকটি পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনার ব্যথা খুব সহজেই ঠিক হয়ে যাবে। যেমন আরো বিশ্রাম লাগলে প্রথমে আপনি সময় দিন। আপনার যতটা লেগেছে তার ওপর নির্ভর করে আপনাকে সেই ব্যথা ঠিক হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে।
আপনার কাছে যদি বরফ না থাকে তাহলে সবুজ ভেজিটেবলস যেগুলো ঠান্ডা থাকে যেমন সিম বা টমেটো সেগুলো চেপে ধরুন। ঠান্ডা জিনিস দিয়ে হালকা চাপ দিয়ে আপনি ব্যথা টা ঠিক করার চেষ্টা করুন। আর ইভ্যালুয়েশন কতটা লেগেছে কিভাবে লেগেছে সেটা আপনিই নির্ণয় করুন । আর সেটা যদি না করতে পারেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
3. আধার নির্যাস:
আধার নির্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। আপনি দিনের একটি সময় চা বা অন্য কাজে আদার রস ব্যবহার করুন। এবং একটি খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করুন, কিছুদিন যাওয়ার পর দেখবেন আপনার ব্যাথা অনেক কমে যাবে। আদার রসের এত গুণ চেনে আপনি অবাক হবেন। এটি বহু কাজের আগে আপনি চাইলে চা সঙ্গেও পান করতে পারেন। এই চায়ের সঙ্গে খেলে কিন্তু আপনার বাতের ব্যথা কমে যাবে দেখতে দেখতে।
4. তাই চি পদ্ধতি:
তাই চি শরীর এবং মন ভালো রাখার একটি প্রাচীন অভ্যাস। এই অভ্যাসটি করলে বহু প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ এই অভ্যাসটি করে আর্থেরাইটিস এবং অন্যান্য ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়ে আসছে। আমেরিকান একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আর্থারাইটিসের রোগীরাও এই অনুশীলনটি করে সুস্থ হয়েছেন। এবং বাতের ব্যথা উপশম করতে এই ব্যায়াম টি খুব কাজে লাগে। শ্বাসের ওপর নিয়ন্ত্রণে রেখে এই অনুশীলনটি করলে তা থেকে আপনার দীর্ঘস্থায়ী আপনি ফল পাবেন, এবং ব্যথা কমে যাবে।
5.দৈনন্দিন ব্যায়াম:
দৈনন্দিন ব্যায়াম করুন, আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাহলে আপনার পেশির শক্তি ধরে রাখতে সম্ভব হবে। এবং আপনার পেশি শক্তিশালী হবে এবং পেশিতে ব্যথা কমবে। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন, আপনার বেশী অভ্যস্ত করে নেবে। যাদের আর্থারাইটিস আছে তারা ব্যায়াম না করে হালকা মালিশ করতে পারেন নিয়মিত। এতে আপনার পেশিতে রক্ত চলাচল সচল বেশি হবে এবং ব্যথা ঠিক হবে।
আপনি নিয়মিত পায়ের হালকা কাজ করুন, সাইকেল চালানো হোক বা কিছুটা চলা হোক বা সাঁতার কাটা হোক, নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার শরীর সেই কষ্টটা সহ্য করতে শুরু করবে, আপনার হাঁটুর ব্যথার জন্য উপসর্গ অনেকটাই কমবে কমতে থাকবে এবং আপনি খুব ভালো থাকবেন।